চকরিয়া অফিস :::
মালয়েশিয়া প্রবাসী মোহাম্মদ হাশেম হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে চকরিয়া পৌরশহর। হাশেম হত্যার সাথে জড়িত তার স্ত্রী খদিজা বেগম এবং তার সহযোগিদের গ্রেফতারের দাবীতে আজ শুক্রবার সকাল ১১টা উপজেলা পরিষদের সামনে ও জুমা নামাজের পর জালিয়াপাড়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শতশত মানুষ।
জানা যায়, মালয়েশিয়া প্রবাসী মোহাম্মদ হাশেম হত্যার সাথে জড়িত খুনিদের গ্রেফতারের দাবীতে উপজেলা পরিষদের সামনে চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের জালিয়াপাড়ার শতশত মানুষ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। ওইসময় তাদের সমাবেশে সংহতি জানিয়ে সেখানে বক্তব্য রাখেন, চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলম এমএ, পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, পৌর আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল আমিন টিপু। জুমার নামাজের পর বিক্ষোভে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক মিজবাউল হক, ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি তাজুল ইসলাম, অধ্যাপক জোবাইল হক, আশরাফ আলীসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর দাবী, হাশেম আত্মহত্যা করেনি। তাকে শ্বাষরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। মালয়েশিয়া থেকে ফেরার পর প্রতিদিন খদিজা বেগম পরকিয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে স্বামীকে নানাভাবে নির্যাতন করতো। সে ইয়াবা ব্যবসা করতো। তার বেপরোয়া আচরণে বাধা দেওয়ায় স্বামীকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে। পরে তাকে ফ্যানের মধ্যে ঝুলানো হয়েছে। যে রশি তার গলায় পাওয়া গেছে সেটা দিয়ে একটা মুরগিও মারা যাবে না। খাটের মধ্যে বসানো অবস্থায় ছিলো তার দেহটি।
এদিকে হাশেম হত্যার ঘটনায় একটি অপমৃত্যু ও দুইটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। গত ২৮ আগস্ট মোহাম্মদ হাশেমের বড় ভাই আবুল কাসেম বাদি হয়ে চকরিয়া উপজেলা জুড়িশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে খদিজা বেগমসহ তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য চকরিয়া থানাকে নির্দেশ দেন। এর আগে চকরিয়া থানা পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা করে। গত ৬ আগস্ট হাশেমের স্ত্রী খদিজা বেগম বাদি হয়ে উপজেলা জুড়িশিয়া ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বাদি আবুল কাশেমমে প্রধান আসামী করে আরও ৫জনকে আসামী করা হয়। সেখানে হত্যাকান্ডের প্রতিবাদকারী আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল আমিন টিপুকে আসামী করা হয়েছে। তাকে আসামী করায় ক্ষিপ্ত হয় স্থানীয় এলাকাবাসী।
বাদী আবুল কাসেম জানান, তার ভাই মোহাম্মদ হাশেমের সাথে প্রায় ১৪ বছর পূর্বে একই এলাকার হাজী সৈয়দ আহমদের মেয়ে খদিজা বেগমের মধ্যে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে তিনটি সন্তানও রয়েছে। পরিবারের সূখ শান্তির কথা ভেবে হাশেম ১০বছর পূর্বে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান। স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার কিছুদিন যেতে না যেতে স্ত্রী খদিজা বিভিন্ন পুরুষের সাথে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। স্বামীর বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা দিয়ে জমি-জমা বাড়ি খদিজা নিজের নামে করে ফেলে। এমনকী পাঠানো টাকা দিয়ে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ে খদিজা। এভাবে তার চাচা মালয়েশিয়া থেকে প্রায় ৪০লাখ টাকা পাঠিয়েছেন।
স্ত্রীর পরকিয়া প্রেম ও তার নামে সমস্থ সম্পদ করে ফেলার খবর শুনে আবুল হাশেম ৪ মাস পূর্বে দেশে চলে আসেন। এনিয়ে শুরু হয় স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি। স্ত্রীর এ ধরনের বেপরোয়া আচরণে হাশেম এলাকাবাসী, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বিচার দিয়ে কোন প্রতিকার পায়নি। গত ২৭ আগস্ট নিজ বাড়িতে স্ত্রী খদিজা বেগম ও তার সহযোগিসহ মিলে হাশেমকে হত্যা করে ফ্যানের ফ্যানের সাথে রাখা হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। তাই এ ধরণের পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফ্তার বিচারের আওতায় আনার দাবী জানান।
পাঠকের মতামত: